মোবাইল দিয়ে অ্যাপ তৈরি ফুল বেসিক ধারণা

মোবাইল অ্যাপস তৈরি, মোবাইল অ্যাপস তৈরি,, অ্যাপ তৈরি করার নিয়ম, মোবাইল অ্যাপস তৈরি, মোবাইল দিয়ে অ্যাপ তৈরি, কিভাবে অ্যাপস তৈরি করা যায়, অ্যাপ কিভাবে তৈরি করে, অ্যাপস কিভাবে তৈরি করা হয়,

মোবাইল  দিয়ে অ্যাপ তৈরি করার জন্য অবশ্যই তার বেসিক ধারণা নিতে হবে। প্রফেশনাল মোবাইল অ্যাপস তৈরি ক্ষেত্রে আমাদের কি কি জানতে হবে তা এখানে আলোচনা করা হয়েছে।

আপনি যদি মোবাইল অ্যাপস তৈরি কথা ভাবছেন বা চিন্তা করছেন তাহলে আপনার জন্য এই আর্টিক্যালটি দুর্দান্ত। প্রযুক্তির যুগে কেউ পিছিয়ে থাকতে চায় না। সবাই নতুন কিছু করতে ভালোবাসে তারই সূত্র ধারায় আজকের এই মোবাইল অ্যাপস তৈরির আর্টিক্যাল। মোবাইল অ্যাপস তৈরি একটি টেকলোজি ক্রিয়া। আপনি যদি মোবাইল অ্যাপস তৈরি করার চিন্তা করেন তাহলে আপনাকে মোবাইল অ্যাপস তৈরির বেসিক জ্ঞান জানতে হবেন। হয়তো আপনার মনে মোবাইল অ্যাপস তৈরির ক্ষেত্রে কিছু প্রশ্ন জাগতে পারে, যেমনঃ কিভাবে মোবাইল অ্যাপস তৈরি করবো? মোবাইল অ্যাপস তৈরির ক্ষেত্রে কি কি জানতে হবে? মোবাইল অ্যাপস তৈরি করে কি ইনকাম করা যায়? ইত্যাদি আরোও অনেক প্রশ্নের উত্তর আজ আমি এই নিবন্ধে আলোচনা করবো। ধর্য্য সহকারে এই নিবন্ধনটি মনযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন আশা করি আপনার মনে সকল প্রশ্নের ক্লিয়ার হবে।

আমরা আমাদের মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপস ইনস্টল করি এবং ব্যবহার করি। তবে সকল মোবাইল অ্যাপস একই নয়। বিভিন্ন টেকনোলজিতে বিভিন্ন ধরনের মোবাইল অ্যাপস তৈরি করা হয়। মোবাইল অ্যাপস তৈরির কিছু প্রোগ্রামিং ভাষা বা ল্যাংগুয়েজ রয়েছে- সে সম্পর্কে আমরা নিম্নে জানবো। তবে বর্তমানে মোবাইল অ্যাপস তৈরির ক্ষেত্রে প্রোগ্রামিং ভাষা বা ল্যাংগুয়েজ না জানলেও কিছু ডিফ্ল বা সীমিত কাস্টমাউজেশন মোবাইল অ্যাপস তৈরি করা যায়। আজকে আমরা দুইটি পদ্ধতি সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

কিভাবে মেবাইল অ্যাপস তৈরি শুরু করবোঃ

কিভাবে মেবাইল অ্যাপস তৈরির কাজ একটি প্রযুক্তি মুলক কাজ। এখানে টেকনোলজি কিছু জানতে হবে এবং নিজেকে স্থির করতে হবে যে আমি মোবাইল অ্যাপস তৈরি করবো। আপনি দুই ভাবে মোবাইল অ্যাপস তৈরির কাজ শুরু করতে পারেন। তার আগে আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি মোবাইল অ্যাপস তৈরি করে কি করতে চান। আমি বলতে চাচ্ছি আপনি কি মোবাইল অ্যাপস ডেভলোপার হতে চান, না কি সীমিত চাহিদার জন্য বা কোন নির্দিষ্ট কাজের জন্য মোবাইল অ্যাপস তৈরি করতে চান? আপনার উদ্দেশ্য কি? আমি এখানে দুই ধরনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করবো।

যারা মোবাইল অ্যাপস ডেভলোপার হতে চান এবং যারা নির্দিষ্ট কাজের জন্য মোবাইল অ্যাপস তৈরি করতে চান তারা সকলেই মনোযোগ সহকারে এই নিবন্ধনটি পড়বেন। আশা করি আপনাদের বেসিক ধারনা দিতে পারবে। যাইহোক, আমি আগেই বলেছি, দুই ভাবে মোবাইল অ্যাপস তৈরির কাজ শুরু করতে পারবেন (১) অফলাইন, (২) অনলাইনের মাধ্যমে - নিম্নে আলোচনা করা হলো।

১। অফলাইনঃ যে পদ্ধতিতে অনলাইনের বহিঃভুতে নিজের দক্ষতা ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে কোন অ্যাপস বা এ্যাপ্লিক্যাশন তৈরি করা হয় তাকে অফলাইন অ্যাপ্লিক্যাশন বিকাশ বলে। অফলাইন মুলত যারা অ্যাপস ডেভলোপমেন্ট শিখতে চায় তাদের জন্য। অফলাইন মোবাইল অ্যাপস শিখতে আপনাকে কিছু প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখতে হবে। যেমনঃ জাভাস্ক্রিপ, জাভা, C#, পাইথন।  এখানে আপনি জাভাস্ক্রিপ অথবা C# শিখে মোবাইল অ্যাপস তৈরির কাজ শুরু করতে পারেন। এই বিষয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

২। অনলাইনঃ অনলাইন মোবাইল অ্যাপস তৈরি একটি সহজ ও জনপ্রিয় পদ্ধতি। এখানে আপনার কোন প্রেগ্রামিং বা কোডিং ল্যাংগুয়েজ জানার প্রয়োজন হবে না। অনলাইনে এমন কিছু ওয়েবসাইট আছে যারা আপনাকে মোবাইল অ্যাপস তৈরি করতে সাহায্য করতে। ওয়েবসাইট গুলোতে অ্যাপসের ডেমো তৈরি করা থাকে আপনি শুধু অ্যাপসের নাম, ব্যাকগ্রাউন্ড, ছবি, স্লাইড বার পরিবর্তন এবং কিছু লিংক দিয়ে নিজের মনের মত অ্যাপস তৈরি করতে পারবেন।

অনলাইনে ওয়েবসাইট থেকে যেসব অ্যাপস তৈরি করা হয় সেগুলো মুলত ব্রাউজিং অ্যাপস- যেমনঃ কারো একটি অনলাইন শপ বা ওয়েবসাইট আছে সেটি গ্রাহক/ক্রেতা বা ব্যবহারকারির  সুবিধার জন্য অ্যাপসে রুপান্তর করে সবার নিকট শেয়ার করা হয়। সেই অ্যাপসের মাধ্যমে ব্যবহারকারি সহজে শপ বা ওয়েবসাইটটি সহজে ব্যবহার করতে পারে।

আবার এমন কিছু ইউটুব চ্যানেল আছে যারা নিজেদের প্রিয় সাবস্ক্রাইবদের সুবিধার জন্য গোটা ইউটুব চ্যানেলটা একটা এ্যাপসে রুপান্তর করে এবং সেটা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়। আবার এই ধরনের অ্যাপস তৈরির মাধ্যমে আপনি টাকাও ইনকাম করতে পারবেন, সে সম্পর্কে জানতে আমাদের আর একটি পাবলিশ করা পোস্ট দেখুন - (অনলাইনে অ্যাপস বানানোর ১০টি ওয়েবসাইট এবং ইনকাম প্রসেস) এই নিবন্ধনটি পড়ুন।

প্রফেশনাল মোবাইল অ্যাপস তৈরিঃ

আপনি যদি মোবাইল অ্যাপস ডেভলোপার হতে চান তাহলে এই অংশটি আপনার জন্য। মোবাইল অ্যাপস ডেভলোপার একটি মুল্যবান কাজ। এর জন্য আপনাকে কোন ইঞ্জিনিয়ারিং করতে হবেন না। অ্যাপস ডেভলোপের জন্য নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর রিসার্চ করে আয়ত্ত করতে হবে। এটি যে খুব বেশি কঠিন তা নয়, তবে আপনার যদি দীর্ঘ বিশাস থাকে যে আমি এটি করবো এবং এর প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কি আছে তা দেখে ছাড়বো তাহলে আপনার দ্বারা সম্ভব। আমার এই বেসিক ধারণা আপনাকে উদ্ভুত করতে পারে।

প্রফেশনাল অ্যাপস ডেভলোপের জন্য প্রাথমিক ভাবে আপনার যা যা প্রয়োজন তা নিম্ন রুপঃ

যান্ত্রিকঃ

১। একটি ভালো মানের পিসি। (কমপক্ষে ৬ র‍্যাম ও কোর-আই ৫)

২। ভালো মানের কিবোর্ড ও মাউস

মনসত্বান্ত্রিকঃ

১। ব্যাপক সময় ব্যয় করার মন-মানসিকতা

২। ভুল সংশোধনের মানসিকতা

প্রফেশনাল অ্যাপস ডেভলোপমেন্ট শিখতে আপনার কম্পিউটার বা পিসিতে অনেক ভারি সফটওয়্যার ইনস্টল করতে হবে এবং এসডিকে পরিচালনা করতে হবে। আপনার কম্পিউটার যত শক্তিশালি হবে আপনি তত স্মুথলি ভাবে কাজ করতে পারবেন। আবার 3D গেমস ডেভলোপের ক্ষেত্রে অনলাইনে থেকে বিভিন্ন ডকুমেন্ট বা অ্যাসেট ডাউনলোড করে কাজ করতে হয় তাই আপনার পিসি যত দ্রুতগামি হবে আপনি তত কাজ করে আনন্দ পাবেন। এখন নিচের কিছু কথা মনোযোগ সহকারে পড়েন।

আমি সাজেস্ট করবো আপনি অ্যাপস ডিভলোপমেন্টের জন্য আগে কোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি না হতে। কারণ অনেকে অ্যাপস ডিভলোপমেন্টের জন্য আগে ভাগেই ৮০০০-১৫০০০ টাকা দিয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হয়, পরে দেখা যায় তাঁরা অনেকেই প্রশিক্ষণে প্রোগ্রামিং সম্পর্কে কিছুই বুঝতে পারে না বা সেগুলো তাদের ভালো লাগে না। তখন তাঁরা ছেড়ে দিয়ে চলে আসে। এরকম ঘটনা আমার পরিচিত অনেকেরই ঘটেছে।

তাই আমি সাজেস্ট করি, আপনি অ্যাপস ডেভলোপমেন্ট শেখার প্রস্তুতি নিয়ে আগে আপনি গুগল এবং ইউটুব থেকে বেসিক ধারণা নেন। কোডিং কি, জাভাস্ক্রিপ কি, জাভা কি, C# কি এগুলো সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নেন। তারপর আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনার দ্বারা প্রফেশনাল অ্যাপস ডেভলোপমেন্ট সম্ভব কি না। এর পর যদি আপনি মনে করেন যে আপনার দ্বারা অ্যাপস ডিভলোপমেন্ট শেখা সম্ভব তাহলে আপনি একটি ভালো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হন।

প্রফেশনাল  অ্যাপস ডিভলোপমেন্টের ভবিষ্যতঃ

বর্তমান  ডিভলোপমেন্টের চাহিদা ব্যাপক এবং এর চাহিদা আরোও দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। আপনি যদি অ্যাপস ডিভলোপমেন্ট নিজের ক্যারিয়া করে নিতে চান সেটিও উত্তম হবে। বর্তমান অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা অ্যাপস নিয়ে বিসনেস করে যেখানে আপনি চাকরি করে মাসে ৩০-৫০ হাজার বেতন পেতে পারেন। এমন কি বাইরের দেশে গিয়ে অ্যাপস বিকাশকারি কোম্পানিতে কাজ করে হিয়ুজ পরিমাণ অর্থ ইনকাম করতে পারেন।

তাছাড়া অনলাইন জগতে ইনকাম করার অনেক উপার আছে। প্রথমত আপনি নিজেই প্লে-স্টোরে অ্যাপস পাবলিশ করে এডমোব এড ব্যবহার করে এবং অ্যাপস বিক্রি করে বিক্রয় করতে পারবেন। আর দ্বিতীয়ত, আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেজে ফিল্যান্সিং করতে পারেন। বর্তমান অ্যাপস বিকাশকারীরা ফিল্যান্সিং এর প্রতি প্রবল ঝুকছে এবং ব্যাপক পরিমাণের বৈদেশিক অর্থ উপার্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।

মোট কথা অ্যাপস ডিভলোপমেন্টের ভবিষ্যৎ খুবই ভালো। অ্যাপস ডিভলোপমেন্ট সম্পূর্ণ করে বসে আছে এমন কাউকে খুজে পাবেন না। তবে আপনাকে অর্থ ইনকামের কথা বাদ দিয়ে অধ্যাবসায় ও প্রচেষ্টায় নিজেকে অ্যাপস বিকাশকারী হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।

শেষ কথাঃ

আপনি যদি মোবাইল অ্যাপস ডিভলোপমেন্ট করতে চান তাহলে আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে এবং কিছু কোডিং মনে রাখতে হবে। এটি আপনার কাছে প্রথমে কঠিন মনে হলেও পরবর্তীতে আপনার কাছে সহজ ও সাধারণ মনে হবে। আর আপনি যদি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হয়ে থাকেন তাহলে তাদের গাইডলাইন মানবেন ঠিক আছে কিন্তু তাদের শেখানোর মধ্যে সীমাবদ্ধতা না থেকে আপনি নিজেই ইউটুব, গুগল ঘাটা-ঘাটি করেন তাহলে খুব তারাতারি সমস্যা বের করতে পারবেন এবং সমাধান করতে পারবেন।

তাহলে বন্ধুরা আজ এখান থেকেই শেষ করছি, আশা করি আপনারা মোবাইল অ্যাপস তৈরির বেসিক ধারণা পেয়েছেন। আর এই আর্টিক্যালটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এবং আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে কমন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। (ধন্যবাদ)

Post a Comment

Previous Post Next Post